ভার্চুয়ালি নয়, প্রতিবারেরে মতই আয়োজিত হবে ২০২১ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলা। করোনার কারণে এবার পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে বইমেলা শুরু হওয়ার পরিবর্তে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে এবারের বইমেলা শুরুর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে সব আয়োজন করোনা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে।
রোববার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজীর সঙ্গে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির নেতারা বৈঠকে বসেন। বৈঠক শেষে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক স্বাক্ষরিত একটি প্রস্তাবনাপত্র সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠানো হয়।
গত ১০ ডিসেম্বর বাংলা একাডেমির নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে ২০২১ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলা সাময়িকভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভার্চুয়ালি বইমেলার আয়োজনেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
করোনা মহামারিতে সবকিছু খোলা থাকলেও বইমেলা আয়োজন নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ক্ষোভ জানিয়েছেন লেখক-প্রকাশকরা। তারা বাংলা একাডেমির এ সিদ্ধান্তকে ‘একতরফা’ ও ‘স্বেচ্ছাচারী’ বলে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেন।
বৈঠক শেষে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী গণমাধ্যমকে বলেন, আসন্ন অমর একুশে গ্রন্থমেলা বাতিলের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আমরা আমাদের নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে আলোচনার ভিত্তিতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে কিছু প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। যার মধ্যে রয়েছে, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে শারীরিক উপস্থিতিতে বইমেলা স্থগিত করা এবং বইমেলার আনুষঙ্গিক আয়োজন ভার্চুয়ালি করার প্রস্তাব দিয়েছি।
তিনি বলেন, প্রকাশকরা শারীরিক উপস্থিতিতে বইমেলা আয়োজনের দাবি জানিয়েছেন। আমি তাদের কাছে কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বইমেলা আয়োজন করা যায় সেটির একটি লিখিত প্রস্তাবনা চেয়েছি। তারা সেটি পাঠালে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করব। একই সঙ্গে প্রকাশকদের বলেছি, বইমেলা আয়োজনের জন্য বাংলা একাডেমিকে কমপক্ষে দুই মাস সময় দিতে হবে।
এ বিষয়ে জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ভার্চ্যুয়ালি নয়, শারীরিক উপস্থিতেই বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে। সেটি ফেব্রুয়ারি মাসেই অনুষ্ঠিত হবে। আমরা ২১ ফেব্রুয়ারির আগেই মেলা শুরু করতে চাই। আমরা আমাদের এসব প্রস্তাবনা বাংলা একাডেমিকে লিখিতভাবে পাঠাব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈঠকে উপস্থিত এক প্রকাশক নেতা গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা শারীরিক উপস্থিতিতে মেলা আয়োজনের বিষয়ে একমত হয়েছি এবং সেটি ফেব্রুয়ারি মাসেই। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে, একুশে ফেব্রুয়ারির আগে মেলা শুরু করার, যা চলবে মাসব্যাপী। এ বিষয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক আমাদের কাছে লিখিত প্রস্তাবনা চেয়েছেন কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বইমেলা আয়োজন করা যায়, সে বিষয়ে।
এদিকে, বইমেলা আয়োজনে প্রস্তুত প্রকাশক সমিতি। এ বিষয়ে জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ জানান, বাংলা একাডেমি অপারগ হলে গ্রন্থমেলা আয়োজনের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত তারা। ভাচুর্য়ালি একুশে গ্রন্থমেলা আয়োজন কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়।